সাম্প্রতিক....
Home / প্রচ্ছদ / শরণার্থী সমাচার / মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিছক লোক দেখানো

মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিছক লোক দেখানো


হুমায়ুন কবির জুশান; উখিয়া :
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সেনাবাহিনীর সহিংসতা ও তাদের দেশছাড়াসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জাতিসংঘ এবং বিশ্ব নেতৃবৃন্দের চাপ অব্যাহত থাকলেও কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা মনে করছেন, এই ক্যাম্পেই তাদের ভবিষ্যত নিহিত রয়েছে। তাই তারা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে তাদের ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দিয়ে আত্মীয়তা পাকাপোক্ত করে ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের স্বকিয়তা তারা এখনো ধরে রেখেছেন।পোষাকে ও আপ্যায়নে কথায়, চালচলনে তারা ওপারের চেয়ে এপারে অনেক ভালো রয়েছেন বলে একাধিক রোহিঙ্গা জানিয়েছেন। জয়নব বিবি তার ১৪ বছরের মেয়েকে রোহিঙ্গা ছেলের সাথে বিয়ে দিয়েছেন এবং তারা সুখে আছেন বলে জানান।

জয়নব বিবির স্বামী আব্দুল্লাহ বলেন, ঈদের পর মেয়ের জামায়ের কাছে বেড়াতে পাঠাচ্ছেন তার দশ বছরের আরেক মেয়ে নুরে জান্নাতকে।

নুরে জান্নাত বলেন, আমার সমবয়সী বান্ধবীদের নিয়ে বালুখালী ডি ১৩ ব্লক থেকে খাইংখালী তাজিনিমারখোলা ক্যাম্পে আমরা বেড়াতে যাচ্ছি। রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ভয়াবহ নিপীড়ন-নিযাতন ও হত্যাযঞ্জের কথা অনেকটা ভুলে গিয়ে তারা নতুন করে জীবনকে সাঁজাতে চেষ্টা করছেন।

রোহিঙ্গা নেতা মোরশেদ আলম বলেন, মিয়ানমার আদৌ কি রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান চায়: নাকি সংকট সমাধানে আলোচনা, চুক্তি ও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সব কিছু নিছক লোক দেখানো তা নিয়ে আমাদের সন্দেহ রয়েছে। আমাদের নাগরিকত্বসহ মৌলিক অধিকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারে ফিরে যাব না। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা হাজার হাজার অভিভাবকহীন এতিম শিশুরা এখানে এসে থাকা খাওয়াসহ খেলাধুলায় মেতে উঠে বেড়ে উঠছে। রোহিঙ্গাদের কষ্ট লাগবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন স্থানীয় জনসাধারণ সরকারি-বেসরকারি এনজিও সংস্থা ও আইন শৃঙখলা বাহিনীসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দ।

পরিকল্পিত উখিয়া চাই এর আহবায়ক নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, অসহায় মজলুম রোহিঙ্গা মুসলমানদের পাশে স্থানীয়রা যেভাবে পাহারা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন বলেই আজ হাজার হাজার এনজিও কর্রী দিবা-রাত্রি সেবা দিতে গিয়ে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। রোহিঙ্গা নারি পুরুষসহ এনজিওর মহিলা কর্রীরা নিরাপদে তাদের কাজ ছেড়ে বাসা-বাড়ি পৌঁছতে কোন প্রকার অসুবিধার সম্মুখিন হতে হয়নি।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, রোহিঙ্গারা আমাদের এখানে মেহমান। আমরা মেহমানদের সম্মান রক্ষা করতে জানি। তবে তাদেরকে তাদের স্বদেশে ফিরে যেতে হবে।

এ জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি বারে বারে আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গাদের পাশে দাড়াঁন। তারা যাতে নিজের দেশে ফিরে যেতে পারে তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত আছে। রোহিঙ্গাদেরও মর্যাদার সঙ্গে বাঁচা এবং জীবন-জীবিকার অধিকার রয়েছে। তাই নিপীড়িত মানবতার জন্য আমরা আমাদের চিত্ত ও সীমান্ত উভয় উন্মুক্ত করে দেওয়ায় বিশ্বে বাংলাদেশ প্রশংসিত হয়েছে। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে মানবিক কারণে আমরা এ সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। যার ফলে ১ জন রোহিঙ্গাও না খেয়ে মারা যায় নি।

Share

Leave a Reply

Advertisement

x

Check Also

https://coxview.com/wp-content/uploads/2023/06/Rohingya-Camp-coxs-bazar-8.jpg

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আবারও গোলাগুলিত : নিহত ১

নিজস্ব প্রতিনিধি; উখিয়া : কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আবারও দু’পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে ...

https://coxview.com/coxview-com-footar-14-12-2023/